নতুন নির্বাচন কমিশন প্রত্যাখ্যান নাগরিক কমিটির
নতুন নির্বাচন কমিশনকে প্রত্যাখ্যান করেছে
নবগঠিত রাজনৈতিক সংগঠন জাতীয় নাগরিক কমিটি। এই কমিশন বাতিল করে সংস্কার কমিশনের
প্রস্তাবের আলোকে নতুন আইনের অধীনে নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে তারা।
তাদের বক্তব্য, গণহত্যাকারী আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার প্রণীত কালাকানুনের অধীনে ইসি
গঠন করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে কলঙ্কিত করেছে।
রোববার বিকেলে রাজধানীর বাংলামটরে নাগরিক কমিটির
কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন সংগঠনের মুখপাত্র সামান্তা
শারমিন। এ সময় সংগঠনের আহ্বায়ক নাসীরুদ্দিন পাটওয়ারী বলেন, গত ১৫ বছরে নির্বাচন
কমিশন ফ্যাসিবাদে ভূমিকা রেখেছে। এই পচাগলা নির্বাচন কমিশন এবং কমিশনের কায়দাকানুন
সঠিকভাবে পুনর্বিন্যাস না করে আগামী নির্বাচন হলে শহীদদের রক্ত এবং গণঅভ্যুত্থানের
স্পিরিটের সঙ্গে বেইমানি হবে।
তিনি বলেন, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ছাত্রদের
নিয়োগপ্রাপ্ত ড. ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত সরকারের প্রতি আমরা আশাহত হচ্ছি প্রতিনিয়ত।
আমরা প্রতিনিয়ত বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছি। সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট জমা ও সংস্কার হওয়া
পর্যন্ত আমরা বাংলাদেশে কোনো কিছুর আয়োজন করতে দেব না। গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের
ব্যত্যয় হলে আমরা আবার মাঠে ফিরে যাব।
নাসীর আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর জনগণের কাছে
কমিটমেন্ট ও সরকারকে সহযোগিতার জায়গাটি দেখতে পাচ্ছি না। প্রতিনিয়ত দেখতে পাচ্ছি
রাজনৈতিক দলগুলো টেন্ডার-চাঁদাবাজিতে জড়িয়েও ত্বরিতগতিতে নির্বাচনের দিকে যাত্রা
শুরু করেছে। তিনি বলেন, তারা চান রাজনৈতিক দলগুলো ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে জনগণের
অভ্যুত্থানের ম্যান্ডেট বজায় রাখুক। নইলে জনগণ যে কোনো দলের বিরুদ্ধে আবার দাঁড়াতে
বাধ্য হবে।
লিখিত বক্তব্যে সামান্তা শারমিন উল্লেখ করেন,
২০২২ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে প্রণীত আইনটি বিএনপিসহ
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রত্যাখ্যান করেছিল। আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি,
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ওই আইনের অধীনে নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি গঠন
করে। জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ওই আইন বাতিল করাটাই যুক্তিযুক্ত ছিল।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, নির্বাচন ব্যবস্থা
সংস্কার কমিশনও আইনটি বদলানোর পক্ষে। তারা ইতোমধ্যে একটি নতুন আইনের খসড়া তৈরি
করেছে, যা সরকারের কাছে পাঠানোর প্রক্রিয়াধীন।
নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন,
বর্তমান সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়। দুই হাজার শহীদ জীবন দিলেন, এত মানুষ পঙ্গু-আহত
হলেন, তাদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গঠিত সরকার নির্বাচন দিয়ে দায়মুক্তি নিতে পারে
না।
সরকারের সংস্কারের ম্যান্ডেট আছে কিনা–
এমন প্রশ্নে আখতার হোসেন বলেন, মানুষ জীবন দিয়ে এ সরকারকে ক্ষমতায় আসীন করেছে। এই
বৈধতার ভিত্তিতে সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে তারা কাজ করবেন। কাজেই তাদের ন্যায্যতা
প্রশ্নবিদ্ধ নয়।


