সমৃদ্ধ বাংলাদেশ ভারতের জাতীয় স্বার্থের জন্য অপরিহার্য: দোরাইস্বামী

ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেছেন, শক্তিশালী,
স্থিতিশীল, সমৃদ্ধিশালী ও বিকশিত বাংলাদেশ ভারতের মৌলিক জাতীয় স্বার্থের জন্য অপরিহার্য।
বাংলাদেশের সাফল্য ভারতের জন্য সবচেয়ে মঙ্গলের। এ নিয়ে কারও কোনো সন্দেহ থাকা উচিত
নয়।
আজ সোমবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে দুই
দেশের সম্পর্ক নিয়ে বিক্রম দোরাইস্বামী এই মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, ‘বন্ধুত্ব সব সময়
পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধাবোধের ভিত্তিতে গড়ে ওঠে। কখনো কখনো আমি ও আমার সহকর্মীরা
আমাদের সম্পর্ক নিয়ে অবিশ্বাস লক্ষ করি। শক্তিশালী, স্থিতিশীল, সমৃদ্ধিশালী ও বিকশিত
বাংলাদেশ আমাদের মৌলিক জাতীয় স্বার্থের জন্য অপরিহার্য। আপনাদের সাফল্য আমাদের জন্য
সবচেয়ে মঙ্গলের। এ নিয়ে কারও কোনো সন্দেহ থাকা উচিত নয়।’
দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে অবিশ্বাস প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে ভারতের
হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অবিশ্বাস আছে। কিন্তু তা থেকে বের হয়ে এসে
দুই দেশ একে অপরকে সহযোগিতা করলে উভয়েরই উপকার হবে বলে মনে করেন তিনি।
বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে
খারাপ সম্পর্ক আমরা কখনোই চাই না। আমরা কেন চাইব? একই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যর্থ হোক, তাও
আমরা চাই না।’
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতার দরুন দুই দেশের সম্পর্কে অবিশ্বাস
তৈরি হয়েছে কি না, তা জানতে চাইলে বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে
চীনের ভালো সম্পর্কে ভারতের কিছু আসে–যায় না। অন্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক
নিয়ে অনুমান করা আমার কাজ না। আমার কাজ হচ্ছে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কী হবে,
তা নিয়ে। আর এ জন্য আমি এখানে আছি।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন ঢাকা সফরের অগ্রাধিকারে কোন
কোন বিষয়ে থাকবে, তা জানতে চাইলে বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, দুই নিকট প্রতিবেশীর বন্ধুত্ব
সুসংহত করে আগামী ৫০ বছরে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে দিকনির্দেশনার ওপর জোর দেওয়া হবে।
ভারতের হাইকমিশনার জানান, আগামী মার্চে দুই শীর্ষ নেতার আলোচনায় ঐতিহাসিক
উপাদান, দুই দেশের সরকারি পর্যায়ে সহযোগিতা, জ্বালানি ও উন্নয়ন প্রকল্পের বিষয়গুলোর
পাশাপাশি সম্পর্কের পর্যালোচনা হবে।
তিস্তা চুক্তি দ্রুত হচ্ছে না ইঙ্গিত করে বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, যেকোনো
ধরনের আন্তনদী চুক্তির ক্ষেত্রে ভারতের রাজ্য সরকারের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। ভারতের কেন্দ্রীয়
সরকার এর সঙ্গে জড়িত সবার সঙ্গে আলোচনা করছে।
বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, এ ছাড়া অন্য ছয়টি নদীর তথ্য–উপাত্ত বিনিময়
হয়েছে। এই তথ্য সমন্বয় হওয়ার পরে চুক্তির বিষয়ে তাঁরা অনেক দূর অগ্রসর হবেন।
বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর জন্য কোভিড-১৯ টিকা উপহার হিসেবে দেওয়ার প্রসঙ্গে
বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, ‘আমরা এটির জন্য প্রস্তাব করেছি এবং বাংলাদেশের
সম্মতির জন্য অপেক্ষা করছি। বাংলাদেশ এই টিকা নিলে আমরা খুশি হব।’
ভিসা প্রসঙ্গে বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য এখনো
পর্যটন ভিসা বন্ধ রয়েছ। তবে অন্যান্য শ্রেণিতে প্রতিদিন ১ হাজার ৬০০ ভিসা ইস্যু করা
হচ্ছে।
ডিপ্লোমেটিক করেসপনডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিকাব) সভাপতি
পান্থ রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এ কে
এম মঈনউদ্দীন।


